দুধ চা: সুস্বাদু পানীয় নাকি লুকিয়ে থাকা বিপদ?

 

দুধ চা, বাঙালির কাছে এক অপরিহার্য পানীয়। সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে বিকেলের চা-বিস্কুট, সারা দিন আমাদের জীবনে দুধ চায়ের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু জানেন কি, এই সুস্বাদু পানীয়ের ভেতরে লুকিয়ে থাকতে পারে কিছু ক্ষতিকর দিক?

দুধ চায়ের চারটি ঝুঁকিপূর্ণ দিক:

১. হজমের সমস্যা:

  • দুধে প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটোজ নামক চিনি থাকে। শরীরে ল্যাকটেজ নামক এনজাইম থাকে যা এই ল্যাকটোজ হজম করে। কিন্তু অনেকের শরীরে এই এনজাইমের অভাব থাকে, যার ফলে দুধ খেলেই শুরু হয় পেটের অসুস্থতা
  • বিশেষ করে, সকালে খালি পেটে দুধ চা খেলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।

২. পুষ্টি শোষণে বাধা:

  • দুধ চায়ের অ্যাসিডিটি খনিজ পদার্থ, বিশেষ করে আয়রন শোষণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • দীর্ঘমেয়াদী দুধ চা পানের ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে, যার ফলে অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

৩. হৃদরোগের ঝুঁকি:

  • দুধ চায়ের চর্বি, বিশেষ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা বাড়াতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে দুধ চা পানের ফলে দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।

৪. ক্যান্সারের ঝুঁকি:

  • কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা প্রতিদিন দুই কাপের বেশি দুধ চা পান করেন তাদের প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • তবে, এই গবেষণাগুলো এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং আরও গবেষণার প্রয়োজন।

উপসংহার:

দুধ চা যদিও সুস্বাদু, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে পানের ফলে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তাই, সচেতনতার সাথে এবং মিমাংসায় পান করাই ভালো।

দুধ চা পানের কিছু টিপস:

  • যারা ল্যাকটোজ intolerence-এ ভুগেন, তাদের দুধ চায়ের পরিবর্তে সয়াবিন দুধ, বাদাম দুধ বা অন্য কোন বিকল্প দুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • চায়ের পরিমাণ কমিয়ে দুধের পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।
  • চিনি ব্যবহারের পরিমাণ কমানো উচিত।
  • দিনে এক-দুই কাপ দুধ চা পানের চেষ্টা করা উচিত।
  • পুষ্টিকর খাবারের সাথে দুধ চা খাওয়া উচিত।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url